নববর্ষে মহা ধামাকা : ১২ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা বৃদ্ধির ঘোষণা ত্রিপুরা সরকারের, বাড়ল অনিয়মিত কর্মচারীদের মাসিক ভাতাও
ত্রিপুরা, ২৭ ডিসেম্বর : ইংরেজি নতুন বছরের প্রাক লগ্নে ত্রিপুরায় সরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য মহা ধামাকা নিয়ে হাজির হয়েছে বিজেপি-আইপিএফটি জোট সরকার। এক লাফে আরও ১২ শতাংশ মহার্ঘ ভাতার ঘোষণা দিয়েছে ত্রিপুরা সরকার। তাতে, উপকৃত হবেন প্রায় ১ লক্ষ ৯৪ হাজার শিক্ষক-কর্মচারী ও পেনসনার্স। শুধু তাই নয়, অনিয়মিত কর্মচারীদের জন্য দরাজ হাতে ভাতা বৃদ্ধি করেছে ত্রিপুরা সরকার। তাতে, প্রায় ৮৬০০ জন অনিয়মিত কর্মচারী উপকৃত হবেন।
প্রসঙ্গত, ত্রিপুরায় এই প্রথম রাজ্য সরকার একসাথে ১২ শতাংশ মহার্ঘ ভাতার ঘোষণা দিয়েছে। ইতিপূর্বে, ২০১২ সালে তদানীন্তন বামফ্রন্ট সরকার একসাথে ১০ শতাংশ মহার্ঘ ভাতার ঘোষণা দিয়েছিল।
আজ সচিবালয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর(ডা:) মানিক সাহা বলেন, ত্রিপুরা সরকার শিক্ষক-কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা এবং অনিয়মিত কর্মচারীদের মাসিক ভাতা বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ১ অক্টোবর ২০১৮ সালে নয়া বেতনক্রম চালু হওয়ার পর ইতিমধ্যে ৮ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা প্রদান করা হয়েছে। এখন আরও ১২ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা প্রদানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তাঁর দাবি, ১ ডিসেম্বর থেকে আরও ১২ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা প্রদান করা হবে। তাতে, জানুয়ারির বেতনের সাথে শিক্ষক-কর্মচারীরা ২০ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা পাবেন। তিনি বলেন, ত্রিপুরায় প্রচন্ড আর্থিক সংকট থাক সত্বেও শিক্ষক-কর্মচারীদের স্বার্থে এই সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার।
তিনি বলেন, ত্রিপুরায় বর্তমানে ১ লক্ষ ৪ হাজার ৬০০ জন নিয়মিত কর্মচারী এবং ৮০ হাজার ৮০০ জন পেনসনার্স রয়েছেন। তাঁরা এখন থেকে ওই সুবিধা পাবেন। তাতে, প্রতি বছরে ১৪৪০ কোটি টাকা অতিরিক্ত খরচ ত্রিপুরা সরকারের বহন করতে হবে।
সাথে তিনি যোগ করেন, নিয়মিত কর্মচারীদের পাশাপাশি ত্রিপুরা সরকার অনিয়মিত কর্মচারীদের জন্যও ভেবেছে। তাই, তাঁদের মাসিক ভাতা বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তিনি বলেন, ত্রিপুরায় প্রায় ৮৬০০ জন অনিয়মিত কর্মচারীর মাসিক ভাতা বৃদ্ধি করা হবে। তাঁর দাবি, ত্রিপুরা সরকারের ওই সিদ্ধান্তে তাঁদের ভাতা প্রায় দ্বিগুণ হারে বৃদ্ধি পাবে।
এদিন উপমুখ্যমন্ত্রী তথা অর্থ মন্ত্রী জিষ্ণু দেববর্মা বলেন, আর্থিক সীমাবদ্ধতা সত্বেও ত্রিপুরার শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য ওই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। ফলে, মহার্ঘ ভাতা নিয়ে বিরোধীদের চিত্কার মনে হয় এখন বন্ধ হবে। তাঁর দাবি, সর্বোচ্চ সুবিধা সর্বাধিক মানুষের কাছে পৌছে দেওয়া ত্রিপুরা সরকারের প্রধান লক্ষ্য। তাই, প্রচুর অর্থ খরচ হবে জেনেও ত্রিপুরা সরকার ওই সাহসী সিদ্ধান্ত নেওয়ার পথেই হেঁটেছে।
অর্থ দফতরের সচিব ব্রিজেশ পান্ডে বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার বর্তমানে ৩৮ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা কর্মচারীদের প্রদান করছে। ত্রিপুরা সরকারের অধীনে কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০ শতাংশ। তাই, আজকের সিদ্ধান্তের ফলে ত্রিপুরায় সরকারি কর্মচারীদের এখন ১৮ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা বকেয়া থাকবে।