বিহারই হবে দেশের মডেল: ইয়েচুরি
ত্রিপুরা , ২৩ সেপ্টেম্বর : বিহারে সমস্ত ধর্মনিরপেক্ষ এবং বামপন্থী দলগুলির ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ঘটনাকে ফের অভিবাদন জানালেন সিপিআই(এম)’র সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। একই সঙ্গে তিনি জানিয়ে দিলেন যে, আগামী দিনে এটাই গোটা দেশের মডেল হয়ে উঠবে। নরেন্দ্র মোদি-আরএসএস সরকারের জনবিরোধী নীতির বিরুদ্ধে গোটা দেশে প্রতিবাদ কর্মসূচির অঙ্গ হিসাবেই বৃহস্পতিবার পার্টনার গান্ধি ময়দানে সিপিআই(এম)’র আহ্বানে জনসভা হয়। এই জনসমাবেশে বিহারের ৩৫টি জেলা থেকে ২৫ হাজারেরও বেশি মানুষ এসেছিলেন।
সমাবেশে ইয়েচুরি মোদি-শাহ নেতৃত্বাধীন বিজেপি-আরএসএস সরকারের জনবিরোধী, কর্পোরেটমুখী, কর্তৃত্ববাদী এবং সাম্প্রদায়িক নীতিকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন।
তিনি জরুরি অবস্থার সময় বিহার এবং জয়প্রকাশ নারায়ণের নেতৃত্বাধীন আন্দোলনের কথা উল্লেখ করে বলেন, ওই লড়াই দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে। দেশ রক্ষা পেয়েছে, সাংবিধানিক রীতিনীতিও ফের প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এখন আবার সেই সময় এসেছে বিজেপি- আরএসএস’র হাত থেকে দেশকে রক্ষা করার। তিনি ঘোষণা করেন, বিহারের মতোই সর্বত্র সমস্ত বাম ও ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে জনগণকে সংগঠিত করে ২০২৪ সালে মোদির রাজত্ব থেকে দেশকে মুক্ত করা। ১৯৭৪ সালেও ইন্দ্রপ্রস্থের রাস্তা তৈরি হয়েছিল পাটলিপুত্র থেকেই। এই প্রশ্নেই বিহারের মতো গোটা দেশে বাম ও গণতান্ত্রিক শক্তিগুলিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান ইয়েচুরি। সমাবেশে পার্টির পলিট ব্যুরো সদস্য অশোক ধাওয়ালে মোদির নীতির তীব্র বিরোধিতা করে বলেন, এই রাজত্বে আকাশছোঁয়া মূল্যবৃদ্ধি ঘটেছে, বেকারত্ব ও দারিদ্র্য বেড়েছে, ক্ষুধার হাহাকার চলছে। শ্রমজীবী জনগণ, কৃষক, ক্ষেতমজুর, মহিলা, যুব-ছাত্ররা আক্রান্ত ।নির্লজ্জভাবে ধান্দার কর্পোরেটদের কাছে বেচে দেওয়া হচ্ছে দেশ। ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের মতো ধর্ম ও জাতপাতের ক্ষেত্রে ভাগ করা নীতি নিয়ে চলছে এরা। জনগণের প্রতিরোধ আরও শক্তিশালী করে এই সরকারকে উপড়ে ফেলার আহ্বান জানান ধাওয়ালে। এই সভায় এছাড়াও বক্তব্য রাখেন পার্টির বিহার রাজ্য কমিটির সম্পাদক তথা কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য লালন চৌধুরী, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অবধেশ কুমার সহ সর্বোদয় শর্মা, অরুণ কুমার মিশ্র, বিনোদ কুমার, শ্যাম ভারতী, রাজেন্দ্র প্রসাদ সিং, রামপরি সঞ্জয় কুমার, ভোলা দিবাকর এবং বিধায়ক অজয় কুমার। লালন চৌধুরী, অবদেশ কুমার, অজয় কুমার সহ রাজ্য স্তরের নেতারা বিহারের গুরুতর সমস্যা নিয়েই আলোচনা করেন। তারা বলেন, বাম ও গণতান্ত্রিক শক্তির নয়া রাজনৈতিক সমীকরণ বজায় থাকলে বিহারে ২০২৪ সালে লোকসভা ভোটে বিজেপি’র একটি আসন পাওয়াও দুষ্কর হয়ে যাবে।