দপ্তরের হাতে দুর্নীতির প্রমাণ
ত্রিপুরা , ২৪ সেপ্টেম্বর : ত্রিপুরা ভবনে অনিয়ম, বেনিয়ম আর দুর্নীতির স্পষ্ট ছবি ধরা দিল । প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সাংসদ বিপ্লব কুমার দেবের ঘনিষ্ট বলে দিনের পর দিন স্বেচ্ছাচারিতা চালিয়ে আসা জয়েন্ট কমিশনার আশিস দত্তের যাবতীয় কুকীর্তি প্রকাশ্যে এল। আর তাতে ত্রিপুরা ভবনের কর্মীদের মধ্যে খুশির হাওয়া বইতে শুরু করেছে। ত্রিপুরা দর্পণে কলকাতা ত্রিপুরা ভবনের জয়েন্ট রেসিডেন্স কমিশনারের দুর্নীতির খবর প্রকাশ্যে আসতেই রাজ্য প্রশাসনের অন্দর মহলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছিলো। আর তাতে নড়েচড়ে বসে সচিবালয় প্রশাসন। তুমুল প্রতিক্রিয়ায় সচিবালয় প্রশাসন থেকে টি কে চাকমা ঝটিকা সফরে আসেন কলকাতা ত্রিপুরা ভবনে।
দপ্তরের তদন্তে কলকাতা প্রিটোরিয়া স্ট্রীট ত্রিপুরা ভবনের একাধিক অনিয়ম ও দুর্নীতি পাকাপাকি প্রমাণ উঠে এসেছে আধিকারিক টি কে চাকমার কাছে।
সঙ্গত কারণেই আশিস দত্তের বিরুদ্ধে এখন কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়, সেদিকেই নজর ত্রিপুরা ভবনের সর্বস্তরের কর্মী থেকে বিভিন্ন মহলের। প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন ধরে আশীষ দত্তের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতি থেকে শুরু করে ত্রিপুরা ভবনে আসা রাজ্যের লোকেদের সাথে অভব্য আচরণের অভিযোগ উঠে আসছিল। এই খবর ধারাবাহিক ভাবে ত্রিপুরা দর্পণ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। সংবাদ প্রকাশের পর অতিরিক্ত রেসিডেন্স কমিশনার আশিস দত্ত ত্রিপুরা ভবনের কর্মচারীদের উপর হিটলারীপনা শুরু করেছে বলেই অভিযোগ ভবন কর্মচারীদের। এক প্রকার সমস্ত কর্মচারীকে এক দিক থেকে আরেকদিকে বদলি করে প্রতিশোধ নেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে বলেই কর্মচারীদের অভিযোগ। আশিস দত্তের অভিযোগ কর্মচারীরা সংবাদ মাধ্যমকে খবর দিচ্ছে। তাই তাদের সরিয়ে দিতে হবে। অথচ কলকাতা প্রিটোরিয়া ত্রিপুরা ভবনে একের পর এক অনৈতিক কাজকর্ম চলছে। অতিরিক্ত রেসিডেন্স কমিশনার আশিস দত্ত দুটি কোয়ার্টার দখল করে রেখেছে। ফিশারী দপ্তরের এক কর্মীকে বিনা কারণে মাসের পর মাস ভাড়া ছাড়াই রাখছে ত্রিপুরা ভবনে। শুধু তাই নয় কর্মচারীর অস্তিত্ব নেই এমন খাতেও টাকা নয়ছয় হচ্ছে। ঝটিকা সফরে গিয়ে এস এ দপ্তরের সচিব টি কে চাকমা যাবতীয় তথ্য যে সঠিক তানিয়ে নিশ্চিত হন। তিনি সমস্ত অনিয়ম হাতেনাতে পাকড়াও করেছেন বলেও ভবন সূত্রে খবর। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর নাম করে আশিসবাবু দিনের পর দিন লাগামহীন দুর্নীতি চালিয়ে যাচ্ছিলেন ত্রিপুরা ভবনে। একই সাথে ত্রিপুরা ভবনের কর্মচারীদের উপর স্টিম রুলার চালাচ্ছেন। এবার সেসব বন্ধ হবে বলেই কর্মীদের আশা। যদিও শেষপর্যন্ত চাকমা সাহেব ম্যানেজ হয়ে যান কিনা, সেনিয়েও ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। অন্তত চাকমা সাহেবের অতীত ট্র্যাক রেকর্ড সেই আশঙ্কাকে আরো ঘণিভূত করছে। জানা গেছে এখনো রাজ্য থেকে ত্রিপুরা ভবনে আসা লোকেদের সাথেও বিভিন্ন সময়ে এক্তিয়ার বহির্ভূত আচরণ করছেন আশিস দত্ত। ইচ্ছামত পছন্দমত লোককে রুম দেওয়া হচ্ছে, পছন্দ না হলে রুম দিচ্ছে না। মানুষ বিপদে পড়ে অতি প্রয়োজনে কলকাতার ত্রিপুরা ভবনে আসে। অথচ ত্রিপুরা ভবনের জয়েন্ট রেসিডেন্স কমিশনার আশিস দত্ত সেই সব লোকেদের সাথে অসভ্য আচরণ করার একাধিক অভিযোগ উঠেছে। যদিও আগামী ডিসেম্বর মাসে জয়েন্ট রেসিডেন্স কমিশনার আশিস দত্তের চাকুরীর মেয়াদ শেষ হচ্ছে। যতদূর খবর তিনি পুনরায় রি-এ্যাপয়েনমেন্ট পাবার জন্য আবেদন জানিয়েছেন সরকারের কাছে। তবে তিনি যদি আগামীদিনে রি-অ্যাপয়েন্টমেন্ট পেয়ে ত্রিপুরা ভবনের দায়িত্বে থেকে যান, তবে রাজ্যের মানুষরা ত্রিপুরা ভবনে গিয়ে পরিষেবা পাওয়ার বদলে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য নিয়ে ফিরতে হবে বলেই বিভিন্ন মহল থেকে অভিযোগ। অবশ্য চাকমা সাহেব ঠিকঠাক রিপোর্ট দিলে আশিস দত্তের পুনরায় নিয়োগ তো দূরে, বরং তার বিরুদ্ধে দপ্তরকে যে ব্যবস্থা নিতে হবে-তা একপ্রকার নিশ্চিত।
সুত্র : ত্রিপুরা দর্পন